কবিতা : জয় বাংলা
এই যে, কেন, কি চাই, কেন এসেছি?
আলো নেই, বাতাস নেই, শ্বাস প্রশ্বাসের বালাই নেই
কথা নেই, কাজ নেই,
কেন এসেছি তবে এখানে?
প্রত্যাশা ও প্রপ্তির সংযোগ নেই
অস্তিত্ব অবস্থানের সংজ্ঞা নেই
উৎপাদনের সুষম বন্টন নেই।
তবে আমরা এখানে কেন, কি কাজ?
হাত তালি? কে চায় হাত তালি।
কার আছে সেই হাত, যার করযুগল স্পর্শের শব্দে
মুহুর্মুহু কড়তালিতে প্রকম্পিত হয় দশ দিক?
একদিন হয়েছিলো, যেদিন ভারাক্রান্ত হৃদয়ের বাণী উচ্চারিত হয়েছিলো।
সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদস্পন্দনের ছন্দে প্রকম্পিত হয়েছিলো রেসকোর্স।
পনেরো কোটি হাত উর্ধ্বাকাশে নিক্ষেপ করে বলেছিলো
‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা’
‘তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি।
অলস হাভাতে বাঙালি এক সিংহের গর্জনে
নিতম্ব তুলে দাঁড়িয়ে সিংহনাদে সমস্বরে উচ্চারণ করেছিলো ‘জয় বাংলা’।
সেই দিন, ‘সেই থেকে শুরু দিনবদলের পালা’।
ঠিক সেই দিন এ বাঙালি বুঝতে পেরেছিলো
তার সমস্ত তনু মন প্রাণ জুড়ে সাহস শব্দের যে অস্তিত্ব
তা আজ হিমালয় অতিক্রম করেছে।
২৫’শে মার্চ ঘোর অমানিশার রাতে
মেশিনগানের খৈ ফোঁটা উল্লাসে, বিভৎস্য আগুনের অগ্নিদহনে
ধর্ষিতা মায়ের সবুজ আচলে রক্ত কুন্ডলী বেয়ে যে প্রাণ,
ধীরে ধীরে বাংলা মায়ের পবিত্র স্তনযুগল পান করে-
প্রাণপন যুদ্ধে জয়ী হয়ে স্বশব্দে কেঁদে উঠলো ১৬ই ডিসেম্বরে।
নির্বাক নিথর স্তব্ধ প্রান্তরের নীল আকাশে উড্ডীন,
দিগন্ত সবুজে রক্তে রঙিন;
শিশু বাংলাদেশ।
আজ জেনে রাখুক এই ক্ষণ, এই জনজোয়ার
এই নদীর জল, জেনে রাখুক লক্ষ শহীদ সীমাহীন সম্ভ্রম,
আজো তারা আলোতে বাতাসে সর্বত্র বহমান।
বহমান এই দেশের প্রতিটি ধুলিকনায় হীরন্ময় প্রাণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তোমায় আজ শত কোট আত্মজ প্রণাম।
চেয়ে দেখ তুমি-
তোমার শিশু কন্টকাকীর্ণ পথ মাড়িয়ে
পঞ্চাশের মশ্রিন পথে সম্প্রসারিত করেছে তার ভূমি।
আশীর্বাদ দাও- তোমার সার্ধশত জন্ম বার্ষিকীতে
একাত্তরের শিশু বাংলাদেশ- শতবর্ষী হবে।
জয় বাংলা
আজমল হোসেন লাবু